আজ আপনাদের এমন এক ভেষজের কথা বলব যেটি এখন আন্তর্জাতিক ভাবে “সুপারফুড” এর মর্যাদা পেয়েছে। সুপারফুড হল এমন সব খাদ্য যা অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং দীর্ঘ জীবন ও সুস্বাস্থ্য দান করে। সুপারফুড টির নাম মরিঙ্গা বা মারিঙ্গা । এই মরিঙ্গা এর সাথে আমরা আরও ২ রকম অত্যন্ত উপকারি ও দুর্লভ ভেষজের মিশ্রণে তৈরি করেছি আমাদের “স্লিমিং টি” যেটি আপনাকে মারিঙ্গা এর সকল উপকারিতার পাশাপাশি খুব দ্রুত কোন ক্ষতি ছাড়া ওজন কমাতে সাহায্য করবে। ছেলে মেয়ে উভয়ের জন্যই এটি সমানভাবে কার্যকর।
তবে একটা জরুরি কথা মনে রাখতে হবে আমাদের। এই স্লিমিং গ্রিন টি খাওয়ার পাশাপাশি অবশ্যই নিয়মিত শরীর চর্চা করতে হবে এবং খাওয়া দাওয়া নিওন্ত্রন করতে হবে। ভাত ও আটা জাতীয় খাদ্য কমাতে হবে। মিষ্টি খাবার পরিহার করতে হবে।
আমাদের স্লিমিং টি এর কিছু উপকারিতাঃ
– শরীর থেকে অতিরিক্ত মেদ কমাবে এবং শরীরে জমা হওয়া মেদ দ্রুত হজম করতে সাহায্য করবে।
– ত্বকের জন্য এটি দুর্দান্ত, এটি ত্বক মসৃণ ও টান টান করে দীর্ঘ যৌবন পেতে সাহায্য করবে
– অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যের কারণে, ত্বকে ব্রণ প্রতিরোধে সহায়ক।
– ডায়াবেটিকস এর মহৌষধ এই মরিঙ্গা মিশ্রিত স্লিমিং টি। এটি ডায়াবেটিক কমাতে ও নিয়ন্ত্রনে রাখতে সাহায্য করে।
– অবসাদ ও শারীরিক দুর্বলতা দূর করে
– গ্যাস্ট্রিক ও হজমের সমস্যা দূর কর
– রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
– হৃদরোগ সমস্যায় খুবই কার্যকর
– চুলপড়া বন্ধ করে
– ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রনে রাখে
– মরিঙ্গাতে প্রচুর পরিমাণে খনিজ, ভিটামিনএ, ভিটামিনবি, (ফলিক অ্যাসিড, পাইরিডক্সিন ও রাইবোফ্লেভিন), সি, ই, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, পটাসিয়াম, ফসফরাস, জিঙ্ক ও প্রোটিন রয়েছে।
⬤ মানুষের শরীরে আটটি অতিপ্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড দরকার। মরিঙ্গাতে এই আটটি অ্যামিনো অ্যাসিড রয়েছে। খুব কম সংখ্যক গাছে এই আটটা অ্যামিনো অ্যাসিড একত্রে থাকে। নানা রোগ সারাতে ও রোগ প্রতিহত করতে মরিঙ্গা খুবই উপকারী। মরিঙ্গা কাজ করার শক্তি বাড়ায় এবং মনমেজাজ ভালো রাখে। এতে ফ্ল্যাভোনোইডস, পলিফিনলস ও অ্যাস্করবিক অ্যাসিড মতো আরও অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও রয়েছে। মরিঙ্গায় রয়েছে ফ্রি রেডিক্যাল টারমিনেটার্স পলিফিনলস যা যকৃৎ ভালো রাখে।
⬤ মারিঙ্গা শরীরে ফোলা কমাতে সাহায্য করে। কারও শরীরে উৎসেচক ও প্রোটিনের সমতা ঠিক না থাকলে শরীর ফুলে যেতে পারে, মারিঙ্গা উৎসেচক ও প্রোটিনের সমতা বজায় রাখে। এর ফলে ডায়াবেটিস, শ্বাসনালীর সমস্যা, কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা, বাত ও স্থূলতা দূর হয়। মারিঙ্গা ব্লাডসুগার ও লিপিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। মারিঙ্গা ব্লাড লিপিড নিয়ন্ত্রণ করে এর ফলে হৃদযন্ত্র ভালো থাকে। ধমনীতে কোনও কিছু জমতে দেয় না ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে মারিঙ্গা।
⬤ মারিঙ্গায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই এবং সি থাকে। তাই এই পাতা খেলে মস্তিস্ক সতেজ থাকে ও স্মৃতিশক্তি বজায় রাখতে সাহায্য করে।ফলে অ্যালঝাইমারের আশঙ্কা কমায় ও মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটারে সেরোটোনিন, ডোপামিন ও নোরাড্রেনালিনের সমতা বজায় রাখে। এর ফলে আমাদের মনমেজাজ ভালো রাখে ও স্মৃতি শক্তি বাড়ে।
⬤ সৌন্দর্য্য বাড়াতে মারিঙ্গার ভূমিকা রয়েছে। কারণ মারিঙ্গা খেলে ত্বক উজ্বল হয় ও চুল ভালো থাকে। মারিঙ্গা পাতা রক্ত শোধন করে। এর ফলে ত্বকের একনে (acne) জাতীয় সমস্যা দূর করে।
⬤ যেসব গাছগাছড়া মানসিক চাপ কম করে তাদের ‘সুপারহার্বস’ও বলা হয়ে থাকে। অ্যাডাপ্টজেন্স হল এক ধরণের সুপারহার্ব। তাই মানসিক চাপ কম করতে হলে মারিঙ্গা খেতেই হবে। মারিঙ্গার এত সব গুণ কিছুদিন হল গবেষকদের নজর কেড়েছে। শরীরে অ্যাডাপ্টজেন্স শুধু যে মানসিক চাপ রোধ করে তাই নয়, মানসিক চাপ হলে একজন যাতে খুব সহজেই সেটা কাটিয়ে উঠতে পারেন, তাতেও এটি সাহায্য করে। অ্যাডাপ্টজেন্স মেদ ঝরাতে সাহায্য করে, শরীরকে শক্তিশালী করে, শরীরের ক্ষয় পূরণ করে ও পুষ্টি জোগায়।